বিশ্বব্যাপী একই দিনে মুক্তি পেয়েছে হলিউডের সবচেয়ে প্রত্যাশিত দুই চলচ্চিত্র বার্বি এবং ওপেনহাইমার। দুটি সিনেমাই উত্তর আমেরিকায় তাদের প্রথম সপ্তাহান্তে রেকর্ড সংখ্যক দর্শককে আকর্ষণ করেছে। হলিউডের জন্য গ্রীষ্মের একটি কঠিন শুরুর পরে সিনেমা দুটি প্রথম সপ্তাহ শেষ হওয়ার আগেই মিলিতভাবে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ডলার আয় করেছে।
গ্রেটা গারউইগ পরিচালিত ওয়ার্নার ব্রোসের বার্বি, টিকিট বিক্রি থেকে ১৫ কোটি ৫০ লাখ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা ২০২৩ সালের সবচেয়ে বড় উদ্বোধনী হিসাবে দ্য সুপার মারিও ব্রস মুভিকে ছাড়িয়ে গেছে। পারমাণবিক বোমার জনক জে রবার্ট ওপেনহাইমারের জীবন নিয়ে নির্মত ক্রিস্টোফার নোলানের ওপেনহাইমার ৮ কোটি ৫ লাখ ডলার আয় করেছে, যা কোন জীবনীমূলক চলচ্চিত্রের জন্য একটি রেকর্ড। সিনেমাদুটি সপ্তাহের শেষ নাগাদ ৩০ কোটি ডলারেরও বেশি আয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে যা সর্বকালের চতুর্থ বৃহত্তম বক্স অফিস উদ্বোধনে পরিণত হবে৷
দীর্ঘদিন ধরেই সিনেমা দুটি ঘিরে প্রত্যাশা ছিল দর্শকদের। আর মুক্তির পর সেই প্রত্যাশা পূরনে সক্ষম হয়েছে উভয়েই। গল্পের গাঁথুনি ও নির্মাণকৌশলে বার্বির চেয়ে ওপেনহাইমার যেমন বেশি আলোচনায় রয়েছে, তেমনি বক্স অফিসে ওপেনহাইমারকে বেশ টক্কর দিয়েছে বার্বি। একাধিক প্রতিবেদন অনুসারে, বার্বি ৭০ টিরও বেশি আন্তর্জাতিক অঞ্চলে আয়ের দিক দিয়ে ওপেনহেইমারকে ছাড়িয়ে গেছে।
দ্য হলিউড রিপোর্টারের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে মুক্তির প্রথম দিনে বার্বি ৭০ মিলিয়ন আয় করেছে। এর মধ্যে অবশ্য বৃহস্পতিবারের প্রিভিউ থেকে ২২ মিলিয়ন আয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। সিনেমাটি সপ্তাহান্তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৫০ মিলিয়ন এবং বিশ্বব্যাপী ৭০ টি অঞ্চল থেকে আরও ১২০ মিলিয়ন আয় করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের মধ্যে এটি ২৭০ মিলিয়নেরও বেশি আয় করতে পারে।
অপরদিকে ডেডলাইন রিপোর্ট অনুসারে, ওপেনহেইমার বিশ্বব্যাপী সপ্তাহান্তে ১৬৫ মিলিয়ন আয় করতে পারে, যার মধ্যে প্রায় ৯০ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আসতে পারে। এটি নোলানের তৃতীয় সর্বোচ্চ উপার্জনকারী ওপেনিং উইকেন্ডে পরিণত হতে যাচ্ছে। এর আগে ‘দ্য ডার্ক নাইট রাইজেস’ ১৩১ মিলিয়ন এবং দ্য ডার্ক নাইট ৯৪ মিলিয়ন আয় করেছিল।
এদিকে একই দিনে মুক্তি পাওয়ায় উভয় সিনেমাই বেশ প্রতিযোগিতার মুখে পড়েছে বলেই ধারণা করছেন বাণিজ্য বিশ্লেষকরা। কারো মতে, সিনেমা দুটিই বিগ বাজেটে নির্মিত এবং বছরের অন্যতম প্রত্যাশিত। দর্শকরা দীর্ঘদিন ধরেই অপেক্ষায় ছিলেন। স্টুডিওগুলো সমন্বয়ের অভাব দুটি সিনেমাকেই বেশ কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি করেছে। তবে অনেকের মতে, উভয় সিনেমার আলাদা আলাদা দর্শকশ্রেনী রয়েছে। তাই বক্স অফিসে উভয়েই নিজের সামর্থ্য প্রদর্শর করতে সক্ষম।
এ বিষয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজ এন্টারটেইনমেন্ট রিসার্চের ডেভিড গ্রস বলেছেন, ‘দুটি বড় সিনেমা একসঙ্গে চলার ক্ষেত্রে চলচ্চিত্র শিল্পের খুব স্বাস্থ্যকর রেকর্ড রয়েছে। স্টুডিওগুলি খুব অভিজ্ঞ এবং তারা একে অপরের উপর প্রভাব ফেলছে না। উভয় সিনেমাই সাধারণত ভিন্ন ভিন্ন দর্শকদের আকর্ষণ করে।’ সূত্র: আল-জাজিরা।