স্বযশী অভিনেতা মাসুদ আলী খান আর নেই। আজ (৩১ অক্টোবর) ৪টা ২০ মিনেটে কলাবাগানের নিজ বাসাতেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি... রাজিউন)। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৫ বছর।
বরেণ্য অভিনেতার মৃত্যুর খবরটি নিশ্চিত করেছেন তাঁকে দেখাশুনার দায়িত্বে থাকা রবিন মন্ডল। যোগাযোগ করা হলে ইনডিপেনডেন্ট ডিজিটালকে তিনি বলেন, ‘আজ বিকেল চারটা ২০ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেছেন। আমরা পরবর্তী কাজ নিয়ে ব্যস্ত আছি। শিগগিরই বিস্তারিত জানাতে পারব।’
মাসুদ আলী খানের দাফন কোথায় ও কখন হবে—তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি রবিন মন্ডল।
জানা যায়, অভিনেতার এক ছেলে যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন। তিনিসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে বাকি সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এদিকে, ১৩ নভেম্বর অভিনেতার ছেলের দেশে আসার কথা পূর্ব নির্ধারিত ছিল। তাঁর সিদ্ধান্তের ওপরই সব নির্ভর করছে।
মাসুদ আলী খানের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জের সিংগাইরে। ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই তাঁকে সমাহিত করা হবে।
দীর্ঘদিন ধরে অভিনয় থেকে দূরে আছেন গুণী অভিনেতা মাসুদ আলী খান। বয়সের ভারে ঠিকমতো হাঁটাচলাও করতে পারাটাও সম্ভব ছিল না তাঁর। হুইল চেয়ারই ছিল ভরসা। এ কারণে বেশিরভাগ সময় ঘরের ভেতরেই কাটাতে হতো তাঁকে।
মাসুদ আলী খানের জন্ম ১৯২৯ সালে ৬ অক্টোবর মানিকগঞ্জের পারিল নওধা গ্রামে। বাবা আরশাদ আলী খান ছিলেন সরকারি চাকরিজীবী।
মা সিতারা খাতুন। মাসুদ আলী খান ১৯৫২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পাস করেন। দুই বছর পর জগন্নাথ কলেজ থেকে বিএ পাস করেন। ১৯৬৪ সালে ঢাকায় টেলিভিশন কেন্দ্র স্থাপিত হওয়ার পরপর নূরুল মোমেনের নাটক ‘ভাই ভাই সবাই’ দিয়ে ছোট পর্দায় মাসুদ আলী খানের অভিষেক হয়। আর সাদেক খানের ‘নদী ও নারী’ দিয়ে বড় পর্দায় তাঁর পথচলা শুরু।
মাসুদ আলী খান ১৯৫৫ সালে বিয়ে করেন তাহমিনা খানকে। ব্যক্তিজীবনে এই অভিনেতার এক ছেলে ও এক মেয়ে। চাকরিজীবনে সরকারের নানা দপ্তরে কাজ করেছেন। ১৯৮৮ সালে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের সচিব হিসেবে চাকরি থেকে অবসর নেন। পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে একের পর এক বৈচিত্র্যময় চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি।
তাঁর অভিনীত কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সিনেমা হচ্ছে ‘দুই দুয়ারি’, ‘দীপু নাম্বার টু’, ‘মাটির ময়না’। তাঁর অভিনীত আলোচিত কয়েকটি নাটক হচ্ছে ‘কূল নাই কিনার নাই’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘কোথাও কেউ নেই’ প্রভৃতি।