বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ‘জুলাই ৩৬ হলের’ ছাত্রীরা হলটির পূর্ব নাম বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল বহাল রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে। বৃহস্পতিবার রাতে এই বিক্ষোভ হয়।
বিক্ষোভকারী ছাত্রীরা তাদের সঙ্গে প্রক্টরিয়াল বডির দুর্ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে। তবে বিষয়টি পুরোপুরি নাকচ করে দিয়েছেন বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন।
জানা যায়, ‘জুলাই ৩৬ হলের’ শিক্ষার্থীরা তাদের হলের পুরোনো নাম ফেরত চেয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা প্রভোস্ট কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বাকৃবির সর্বশেষ সিন্ডিকেট সভায় বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলের নাম পরিবর্তন করে জুলাই ৩৬ রাখা হয়। কিন্তু হলের ছাত্রীরা এটি মেনে নেয়নি। শুরুতে হলের ভেতরে তারা বিক্ষোভ করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। পরে সমস্যার সমাধান না হওয়ায় ছাত্রীরা হল থেকে বের হয়ে মিছিল নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে স্লোগান দিতে থাকে।
শিক্ষার্থীরা তাদের লিখিত অভিযোগে বলেন, প্রভোস্ট ম্যাম অভিভাবকের দায়িত্ব পালন করতে পারেননি। প্রক্টরিয়াল বডি ও ছাত্র-বিষয়ক উপদেষ্টা হলে এসেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের ফ্যাসিবাদের দোসর ট্যাগ দিয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা আবাসিক শিক্ষার্থী কারা– এমন উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়েছেন। আবাসিক শিক্ষার্থীদের কাছে আইডি ও ফ্যাকাল্টি জানতে চাযন। তাঁরা হুমকি দিয়েছেন ভাইভা বোর্ডে ফেইল করিয়ে দেওয়ার। হলের নাম মেনে না নেওয়ায় সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন স্যার ‘বঙ্গমাতার সাথে এত পিরিত কেন?’- এমন বক্তব্য দিয়েছেন। সহকারী প্রক্টর আনিসুর রহমান মজুমদার (টিটু) স্যার ব্যক্তিগত অ্যাটাক করেন। একজন শিক্ষার্থীর সঙ্গে বাজে ব্যবহার করেছেন এবং ‘তুমি ছাত্রলীগ’ বলে অপবাদ দিয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘নতুন প্রবর্তিত নাম ‘‘জুলাই ৩৬’’ চাই না, পূর্বের নাম ‘‘বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল’’ বহাল চাই। সিন্ডিকেটের প্রক্রিয়া দ্রুত সম্ভব সম্পন্ন করা হোক এবং সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত পূর্বের নাম বহাল থাকবে।
এ বিষয়ে বাকৃবির সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. মুনির হোসাইন বলেন, ‘ছাত্রীদের আমরা বলি, যেহেতু এটা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত, আমাদের কিছু করার নেই। তোমাদের কোনো অভিযোগ থাকলে লিখিত দাও। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমাদের গালিগালাজ করে এবং বলে, সিন্ডিকেটকে এখানে ডাকেন। হলের আগের নামটি আমাদের আবেগ। আপনারা কি করবেন, আমাদের ফেইল করিয়ে দেবেন, দেন।’
সহকারী প্রক্টর আরও বলেন, ‘আমরা অনেক চেষ্টা করেছি শিক্ষার্থীদের বোঝাতে। তবে তারা উল্টো আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করে। এখনো ক্যাম্পাসে স্বৈরাচারীর দোসররা আছে, তাদের ইন্ধনেই এসব ঝামেলা হচ্ছে।’
বাকৃবির জুলাই ৩৬ হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. তাহসিন ফারজানা বলেন, ‘আমি শিক্ষার্থীদের অনেক বুঝাতে চেষ্টা করেছি যে বিষয়টি সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত। তবে তারা কিছুতেই বুঝতে রাজি হয়নি এবং পরবর্তীতে মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে চলে যায়। আমি অনেক্ষণ অপেক্ষা করে সেখান থেকে চলে যাই। তবে আমি সার্বক্ষণিক তাদের খোঁজ–খবর নিয়েছি।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম