ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নারী শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট নিরসনে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে প্রতীকী অনশনে বসেছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ ছাত্রী। পরে উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সায়মা হক বিদিশা এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনায় বসার আশ্বাস দিলে তারা শর্তসাপেক্ষে কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন।
সোমবার সকাল ১১টা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে এ কর্মসূচি শুরু করেন তারা। দুপুর দেড়টার দিকে উপ-উপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ বাসভবনের সামনে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলেন।
প্রতীকী অনশনকারী সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া সুলতানা প্রমি বলেন, বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে আলোচনা করা হবে বলা হয়েছে। তবে আমরা তিনটি শর্তে আলোচনায় যাব- অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে; প্রয়োজন এবং আর্থিক সামর্থ্যের ভিত্তিতে জরুরি আবেদনের মাধ্যমে বিভাগভিত্তিক সিট বরাদ্দের বিজ্ঞপ্তি দিতে হবে। মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী মূল ক্যাম্পাসেই নতুন হল নির্মাণের বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের মেয়েদের জন্য পাঁচটি হল রয়েছে, ছেলেদের হল ১২টি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ছাত্রের তুলনায় নারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে। ফলে মেয়েদের হলগুলোতে আবাসন সংকট প্রবলভাবে দেখা দিয়েছে। যার কারণে প্রায়ই নারী শিক্ষার্থীরা আবাসনের জন্য আন্দোলনে নামছেন।
এ দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক রফিকুল ইসলাম স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে প্রশাসন জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন প্রকল্প সরকারের কাছে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এতে ২ হাজার ৮৪১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে ‘চারটি ছাত্রী হলের বর্ধিত ভবন নির্মাণ প্রকল্প’ অনুমোদনের জন্য সরকারের কাছে প্রেরণ করা হয়েছে। এই প্রকল্প অনুমোদিত হলে প্রায় ৩ হাজার ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা হবে। এছাড়া চীন সরকারের আর্থিক সহযোগিতায় ২৪৪ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত ‘বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী হল নির্মাণ প্রকল্পটি’ বর্তমানে মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
চারটি হল নির্মাণের প্রকল্পে শাহনেওয়াজ হোস্টেল ভেঙে ১৫-তলা বিশিষ্ট একটি ছাত্রী হল নির্মাণ, ১০-তলা ও ৬-তলা বিশিষ্ট শামসুন নাহার হলের দু’টি সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণ, লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটের বিদ্যমান স্টাফ কোয়ার্টার বি এবং ডি ভবন ভেঙে ১১-তলা ও ৮-তলা বিশিষ্ট দু’টি ভবনের সমন্বয়ে একটি ছাত্রী হল নির্মাণ এবং ১০-তলা বিশিষ্ট কুয়েত মৈত্রী হলের সম্প্রসারণ ভবন নির্মাণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রশাসন বলেছে, আবাসিক সংকটের মতো দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত একটি জটিল সমস্যা রাতারাতি সমাধান করা সম্ভব নয়।