গ্রীষ্মের ছুটি...কোটা আন্দোলন...ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান; নানা ঘটনায় দীর্ঘ ১১২ দিন বন্ধ ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। টানা সাড়ে তিন মাসেরও বেশি সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক একাডেমিক কার্যক্রমের পাশাপাশি স্থবির হয়ে পড়েছিল শিক্ষার্থী সম্মিলিত কর্মকাণ্ডে মুখর পরিবেশ।
দীর্ঘ সময়ের অস্থিরতা কাটিয়ে রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) থেকে ফের ক্লাসে ফিরেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ বিভাগে শ্রেণি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ক্লাসে ফিরতে পারায় কলা, সামাজিক বিজ্ঞানসহ বিভিন্ন অনুষদ ঘুরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে প্রাণচাঞ্চল্যতা দেখা গেছে।
রোববার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ক্যাম্পাসের শ্যাডোয় শিক্ষার্থীদের ভিড় জমেছে। বটতলা ও কলাভবন ফটকের সিঁড়িতে অনেকে বন্ধু-বান্ধবের সাথে আসরে মেতেছেন। সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরি ও হাকিম চত্বরে অনেকেই আড্ডায় দিচ্ছেন। কেউ কেউ ক্লাস শেষে বন্ধুদের সঙ্গে বসেছেন চায়ের আসরে। কেউ কেউ করছেন সকালের নাস্তা। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে মধুর ক্যান্টিনও বেশ ব্যস্ত সময় পার করছে।
শিক্ষার্থীদের ফেরা উদযাপন করতে ‘ক্লাসে ফেরা উৎসব’ পালন করেছে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ। দীর্ঘদিন পরে শ্রেণীকক্ষে ফেরা শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করে নিয়েছেন বিভাগের শিক্ষকরা। এছাড়াও বিভিন্ন বিভাগে শিক্ষার্থীদের খোঁজ-খবর নিয়েছেন শিক্ষকরা। শিক্ষার্থীরা বলছেন, ফ্যাসিবাদের পতনের পর ক্যাম্পাসে ফিরতে পেরে তারা স্বস্তি বোধ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিপীড়নমুক্ত এই পরিবেশ বজায় থাকবে বলেও তারা প্রত্যাশা করছেন।
অভ্যুত্থানের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে স্বস্তির নিশ্বাস ফেলার একটি পরিবেশ তৈরি হয়েছে বলে মনে করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ান আল হাসান। তিনি বলেন, এতদিন মতপ্রকাশের সুযোগ ছিল না। ফলে যারা এতদিন সুযোগ পাননি, তারা সে সুযোগ কাজে লাগাচ্ছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এখন কোনো রাজনৈতিক দলের অনুগত থাকার বাধ্যবাধকতা নেই। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিদুর রহমান বলেন, অনেকদিন পর আবারও বন্ধুদের সাথে ক্লাস শেষে টিএসসি এলাম। রাষ্ট্রের চলমান অনেক বিষয়ে আমরা আড্ডা দিয়েছি। ক্লাস খুলে দেওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের এভাবে ফিরতে পারা বেশ ভালো লাগার।
এমএমএইচ/রেডিওটুডে