ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সিনেট সদস্য হিসেবে সিন্ডিকেটে মনোনিত হন ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম এবং এস এম বাহালুল মজনুন। তিন বছর মেয়াদী এ পদে তাদের দায়িত্ব শেষ হয় ২০২০ সালের জুনে। নিয়মানুযায়ী, সিনেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব শেষ হলে সিন্ডিকেটেও প্রতিনিধিত্ব করা যাবে না। কিন্তু নিয়মের বাইরে গিয়ে অবৈধভাবে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন তারা। ফলে এই দুই সদস্যের দায়িত্ব পালনকালে সিন্ডিকেটে গৃহীত সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও বাহালুল মজনুন ২০১৭ সালের ২২ মে সিনেট সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। সে হিসেবে ২০২০ সালের ২১ মে তাদের মেয়াদ শেষ হয়েছে। তারপরও একই বছরের ১৪ জুন ওই সিনেটের সর্বশেষ সভায় শিক্ষক ক্যাটাগরিতে অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ও রেজিস্ট্রাড গ্রাজুয়েট ক্যাটাগরিতে এস এম বাহালুল মজনুনকে সিন্ডিকেট সদস্য মনোনীত করা হয়।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সময় করা ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাদেশ-৭৩’ এর ২০ (২) ধারায় বলা হয়েছে, ‘ছাত্র প্রতিনিধি ছাড়া অন্য সিনেট সদস্যরা তিন বছরের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত হবেন। এবং ছাত্র প্রতিনিধিদের মেয়াদকাল এক বছর।’ সেক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতয় ঘটলে সেটি অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবেন বলেও মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
২০১৭ সালের ২২ মে সিনেট সদস্যদের দায়িত্বের মেয়াদ থাকে তিন বছর। সেই হিসেবে তাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২০ সালের ২১ মে। যদিও মহামারি করোনার কারণে মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েকদিন পরে ১৪ জুন সর্বশেষ সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় এই দুইজনকে এক বছরের জন্য সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। তার মেয়াদও শেষ হয় ২০২১ সালের ১৩ জুনে। তারপরও এখন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন।
এ বিষয়ে বর্তমান সিন্ডিকেট সদস্য ও অনুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, সিনেট সদস্য হিসেবে তিন বছর মেয়াদ থাকে। সেই হিসেবে তাদের যখন নিয়োগ দেওয়া হয় তখন অনেকেই উদ্বেগ দেখিয়েছিল। তারপর তাদেরকে এক বছর নিয়োগ দেওয়ার পরও সেটারও মেয়াদ শেষ। এ নিয়েও অনেক সময় কথা উঠেছে। যদিও এটা আর বেশি দূর এগোয়নি। তবে তাদেরকে নিয়ে গৃহীত সিদ্ধান্ত অবৈধ কিনা তা বড় আইজীবীরা বলতে পারবেন।
এ বিষয়ে জানতে শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।
এদিকে এস এম বাহালুল মজনুন বলেন, "সিন্ডিকেটের পরবর্তী নিবার্চন না হওয়া পর্যন্ত আমরা দায়িত্ব পালন করবো। এটাই নিয়ম বলে তিনি দাবি করেন। কিন্তু সিনেট সদস্য হিসেবে মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও সিন্ডিকেটে সিনেট সদস্য হিসেবে থাকাতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই নিয়ম অনিবার্চিত সদস্যদের জন্য প্রযোজ্য। আমাদের জন্য নয়। আমরা নিবার্চিত সদস্য।"
এ বিষয়ে ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো: আখতারুজ্জামান বলেন, "নিয়মের বাইরে কোনো কিছুই সংগঠিত হওয়ার সুযোগ নেই। বিষয়টি খোঁজ নেওয়া হবে। যথাযথ ফোরামে নিয়ম-নীতির আলোকেই সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।"
রেডিওটুডে নিউজ/ইআ
ইমদাদুল আজাদ