চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি সময়ে সিগারেটের খুচরা মূল্য বাড়ানোর পাশাপাশি সকল স্তরের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ৬৭ শতাংশ করা হয়েছে। এর ফলে ধূমপানের হার যেমন কমবে তেমনি সরকার বাড়তি রজস্বও পাবে। তবে অর্থ বছরের শুরুতেই এমন পদক্ষেপ নেয়া গেলে আরও বেশি সুফল পাওয়া যেতো। বেসরকারি গবেষণা সংস্থা উন্নয়ন সমন্বয়ের আয়োজনে আসন্ন ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সিগারেটে করারোপ বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন বিভিন্ন তামাক-বিরোধী নাগরিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষজ্ঞ আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য অর্থনীতি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. শাফিউন নাহিন শিমুল, একই ইনস্টিটিউটের সহযোগি অধ্যাপক ড. সুজানা করিম, এবং বাংলাদেশে প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির সহযোগি অধ্যাপক ড. নাজমুল ইসলাম। এছাড়া নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে বক্তব্য রাখেন নিউজ২৪-এর বিশেষ প্রতিনিধি বাবু কামরুজ্জামান এবং সাবেক জাতীয় ফুটবলার কায়সার হামিদ ও শেখ মো. আসলাম।
মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমন্বয়ের গবেষণা পরিচালক আব্দুল্লাহ নাদভী। তিনি বলেন সিগারেটে কার্যকর করারোপ না করার ফলে সরকার প্রতি বছর ৬,৬০০ কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে। চলতি অর্থবছরের মাঝামাঝি সিগারেটে যথাযথ করারোপের যে উদ্যোগ নেয়া হয়েছে তাতে করে ৫ হাজার কোটি টাকার মতো বাড়তি রাজস্ব পাওয়া যবে। তবে এমন উদ্যোগ অর্থবছরের শুরুতে নেয়া হলে আরও প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব যোগ করা যেতো।
রাজস্ব বাড়া-কমা নয়, বরং আগামী প্রজন্মকে সিগারেটের ক্ষতি থেকে সুরক্ষা দেয়ার জন্যই সিগারেটে যথাযথ করারোপ করা দরকার বলে মত দেন কায়সার হামিদ এবং শেখ আসলাম। ড. শিমুল বলেন জানুয়ারি ২০২৫- এ এসে প্রথমবারের মতো নিম্ন স্তরের সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে অন্য উচ্চতর স্তরের সিগারেটগুলোর সমান (৬৭ শতাংশ) করা হয়েছে। যেহেতু কিশোর-তরুণরা মূলত নিম্ন স্তরের সিগারেটই ব্যবহার করেন, তাই এই স্তরের সিগারেটের ওপর কর হারা বাড়ানোর উদ্যোগ স্বাগত জানাতে হবে বলে তিনি মত দেন। সিগারেটে কার্যকর করারোপের মাধ্যমে আসন্ন বছরে ধূমপানের হার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় কমানোর পাশাপাশি চলতি বছরের চেয়ে ২০ শতাংশ বাড়তি রাজস্ব পাওয়া সম্ভব বলে মন্তব্য করেন তিনি। ড. সুজানা করিম বাজারে বিক্রি হওয়া সিগারেটের স্তর চারটি থেকে কমিয়ে তিনটি করার আহ্বান জানিয়ে বলেন এমনটি করা গেলে সিগারেট বিক্রি থেকে কর আহরণ যেমন সহজ হবে, তেমনি সিগারেট ব্যবহারের হারও কাঙ্ক্ষিত হারে কমানো সম্ভব হবে।
উন্নয়ন সমন্বয়ের হেড অফ প্রোগ্রামস- শাহীন উল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন।