রোববার,

০৫ জানুয়ারি ২০২৫,

২২ পৌষ ১৪৩১

রোববার,

০৫ জানুয়ারি ২০২৫,

২২ পৌষ ১৪৩১

Radio Today News

সবজিতে বাঁচানো টাকা ঢালতে হচ্ছে চালে

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ৩ জানুয়ারি ২০২৫

Google News
সবজিতে বাঁচানো টাকা ঢালতে হচ্ছে চালে

একদিকে মাসখানেক আগে মাঠ থেকে উঠেছে আমন ধান, অন্যদিকে চাল আমদানিও থেমে নেই। ক্রেতারা মনে করেছিলেন, এ সময়টাতে চালের বাজার তাদের অনুকূলেই থাকবে। সেই আশায় যেন গুড়েবালি! লাফিয়ে বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো চাল কেজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বাড়ার ছুতা তুলে চালের দর বাড়াচ্ছেন মিলাররা। এভাবে অযাচিত দাম বাড়ার কারণে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে সস্তায় শীতকালীন সবজি কিনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও ক্রেতার সাশ্রয়ের সেই টাকা খেয়ে ফেলছে চালের বাজার। 

সরকারি সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে চালের কেজিতে গড়ে দর বেড়েছে ১২ শতাংশ। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার মহাখালী, কারওয়ান বাজার ও নাখালপাড়া সমিতি বাজারে চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা। 

বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়।

নাখালপাড়ার মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী মো. হেলাল বলেন, এখন আমনের মৌসুম। ভারত থেকেও চাল আসছে। তবু বাজার চড়া। কোনো কারণ ছাড়াই মিলাররা দর বাড়াচ্ছেন। মিল পর্যায়ে দুর্বল তদারকির কারণে সরকারকে বিপদে ফেলতে মিলাররা কৌশলে দাম বাড়াচ্ছেন বলে মনে করেন মুক্তা রাইস এজেন্সির স্বত্বাধিকারী মো. শাহাজান মিয়া। তিনি বলেন, ধানের দাম বাড়ছে এমন অজুহাতে মিলাররা চালের বাজার গরম করছেন। আসলে ধানের দর বাড়ছে কিনা, জানি না।

এদিকে সরবরাহ বাড়ায় কয়েক দিন ধরে বেশ সস্তায় বিক্রি হচ্ছে সবজি। দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব সবজির দর ৬০ টাকার কমে মিলছে। বিশেষ করে প্রতি কেজি মুলা ও শালগম ১৫ থেকে ২০, শিম ২০ থেকে ৪০, গাজর ৫০ থেকে ৫৫, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০, উচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ এবং বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ৫০ থেকে ৭০, বরবটি ৫০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বড় আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে 
৫০ টাকায়। 

সবজির দর কমে যাওয়ায় ডিমের দরও নেমেছে। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। তবে মুরগির দর আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

আলুর বাজারেও স্বস্তির খবর রয়েছে। বাজার ভরে গেছে নতুন আলুতে। ফলে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি। 

অনেকটাই কমেছে পেঁয়াজের দর। প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ ও পুরোনো পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ২৩০ থেকে ২৩৫ এবং আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২২৫ টাকায় 
বিক্রি হচ্ছে। 

এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। অপরিবর্তিত দেখা গেছে মাছের বাজার।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের