শুক্রবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৫,

১১ বৈশাখ ১৪৩২

শুক্রবার,

২৫ এপ্রিল ২০২৫,

১১ বৈশাখ ১৪৩২

Radio Today News

পদত্যাগ করেননি, মন্ত্রণালয়ের চিঠিও পাননি দাবি কুয়েটের সহ-উপাচার্য

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ১৮:৪৬, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

আপডেট: ১৯:৩১, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

Google News
পদত্যাগ করেননি, মন্ত্রণালয়ের চিঠিও পাননি দাবি কুয়েটের সহ-উপাচার্য

সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম বলেন, ‘গণমাধ্যমের খবরে দেখছি যে কুয়েটের ভিসি ও প্রো–ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং অধ্যাপক হারুন অর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এ–সংক্রান্ত কোনো মেইল এখনো আমি পাইনি। আর আমি পদত্যাগ করিনি বা পদত্যাগের জন্য কোনো চিঠি পাঠাইনি।’

শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনের মধ্যে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য ও সহ-উপাচার্যের পদত্যাগপত্র নিয়ে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে।

এর আগে আজ (২৪ এপ্রিল) জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন যে কুয়েটের উপাচার্য ও সহ–উপাচার্যকে সরিয়ে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান।

তবে, সহ-উপাচার্য অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম প্রথম আলোকে জানিয়েছেন যে তিনি পদত্যাগ করেননি, যা গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন এবং সরকারি কর্মকর্তাদের বক্তব্যের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

তিনি বলেন, 'গণমাধ্যমের খবরে দেখছি যে কুয়েটের ভিসি ও প্রো–ভিসিকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে এবং অধ্যাপক হারুন অর রশিদকে ভারপ্রাপ্ত ভিসির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে এ–সংক্রান্ত কোনো মেইল এখনো আমি পাইনি। আর আমি পদত্যাগ করিনি বা পদত্যাগের জন্য কোনো চিঠি পাঠাইনি।'

অন্যদিকে অধ্যাপক শেখ শরীফুল আলম জানান, তিনি পদত্যাগ করেননি, বরং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) এক সদস্যের মাধ্যমে শিক্ষা উপদেষ্টার কাছে একটি আনুষ্ঠানিক চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে তিনি কর্তৃপক্ষকে অব্যাহতি দেওয়ার মতো 'পক্ষপাতমূলক সিদ্ধান্ত নেওয়া' থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান এবং অধিকতর তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

শরীফুল আলম বলেন, 'গত বছরের ৪ ডিসেম্বর তিনি সহ–উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। তবে যোগদানের পর থেকে উপাচার্য তাঁকে কোনো প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজে সহযোগিতা করেননি।'

তিনি লেখেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট কর্তৃক সহ–উপাচার্যের সীমিত আকারে প্রশাসনিক ও আর্থিক কাজ করার যে নীতিমালা ছিল, তা গত ১১ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯৭তম (জরুরি) সিন্ডিকেট সভার মাধ্যমে বাতিল করে দেওয়া হয়। ফলে গত চার মাসে প্রশাসনিক কাজ ও আর্থিক বিলে স্বাক্ষর করতে না দিয়ে তাঁকে বঞ্চিত করা হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ–উপাচার্য পদটি একটি অলংকারিক পদে পরিণত করা হয়।'

তিনি আরও লেখেন, 'আমি নিজে এখনো আমার অপরাধ সম্পর্কে জানি না এবং আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগও দেওয়া হয়নি, যা খুবই দুঃখজনক ও অনভিপ্রেত। আমাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দেওয়া এবং কোনো অপরাধ বা অপকর্ম না করে অব্যাহতি দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ভুল বার্তা যাবে বলে মনে করি।'

প্রসঙ্গত, গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কুয়েটে বিএনপির ছাত্র সংগঠন ছাত্রদলের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবি জানিয়ে আসছিল। এ ঘটনায় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।

পরদিন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবন ঘেরাও করে রাখেন। এরপর সিন্ডিকেট সভায় ক্যাম্পাসে সব ধরনের রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করা হয় এবং একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ওই রাতেই অজ্ঞাত ৪০০-৫০০ জনকে আসামি করে খানজাহান আলী থানায় মামলা করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

এরপর থেকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের বিরুদ্ধে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ার অভিযোগ এনে এবং ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি পুনরায় শুরুর প্রচেষ্টায় সমর্থন করার অভিযোগ এনে তার পদত্যাগ দাবি করে আসছেন।

২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা একটি প্রতিবাদ মিছিল করে এবং সব রাজনৈতিক ছাত্রসংগঠনের বিরুদ্ধে 'রেড কার্ড' প্রদর্শন করে উপাচার্যের পদত্যাগ দাবি করেন।

২৩ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ঢাকায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ছয় দফা দাবি সংবলিত একটি স্মারকলিপি জমা দেন, যার মধ্যে উপাচার্যের পদত্যাগ এবং ১৮ ফেব্রুয়ারির ঘটনার বিচার ছিল অন্যতম।

এরপর ২৫ ফেব্রুয়ারি ৯৯তম জরুরি সিন্ডিকেট সভায় সব আবাসিক হল অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের পরদিন সকাল ১০টার মধ্যে হল ছাড়ার নির্দেশ দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীরা টানা ৬৫ দিনেরও বেশি সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের