
দরপত্রের মাধ্যমে পাওয়া কাজের টাকায় ঠিকাদারের কাছে ‘জিলাপি’ খেতে চাওয়ার ঘটনায় কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে ওসিকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
এর আগে সোমবার এ ঘটনার একটি ফোনালাপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়।
ফোনালাপে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা পর্যায়ের সংগঠক ও ঠিকাদার আফজাল হুসাইন শান্তর সঙ্গে কথা বলেন ইটনা থানার ওসি মো. মনোয়ার হোসেন।
সেখানে ওসিকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলাম তো সারা জীবন; তোমরা যে ১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকেরে খাওয়ালে না।
“খাইয়া একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের; তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের উপরে টাকা আইনা আগে জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইল সবার আগে; পরে তো বিল পামু, তাই না?”
এক পর্যায়ে ওসি বলেন, “ঠিক আছে তাহলে, জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম নাকি? না না, জিলাপি হইলেই হইব; এক প্যাঁচ, আধা প্যাঁচ জিলাপি দিলে হইব। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইল আর কী, বোঝ না?”
এ সময় আফজাল হুসাইন শান্ত বলেন, “বিল-টিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবনে।” তখন ওসি বলেন, “ঠিক আছে।”
ঠিকাদার শান্ত পরে ফোনালাপের বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে বলেন, “আমি ইটনা উপজেলার বলদা হাওরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ১৪৮০ মিটার ফসল রক্ষা বাঁধের কাজ পাই।
“কাজ শেষ হওয়ার পরে থানায় গেলে তিনি (ওসি) জিলাপি খেতে টাকা চাইতেন। তখন রেকর্ড করে রাখতে পারিনি। পরে ওসির সঙ্গে ফোনে আমার কথা হলে আমার কাছে ফসল রক্ষা বাঁধ করে যে লাভ হয়েছে, সেখান থেকে জিলাপি খেতে চান।”
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বলেন, ওসি মনোয়ার হোসেনকে প্রত্যাহার করে ইটনা থানায় নতুন ওসি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া প্রকাশ হওয়া ফোনালাপ নিয়ে তদন্ত চলছে।