
ঈদ মানেই খুশি, ঈদ মানেই আনন্দ। কিন্তু এই আনন্দ কি সবার জন্য সমান? সমাজের একটি অংশ যখন নতুন পোশাক, সুস্বাদু খাবার ও পরিবার-পরিজনের সঙ্গে ঈদের উৎসবে মেতে ওঠে, তখন অনেকের ঈদ শুধুই আরেকটি দিন-আরেকটি সংগ্রামের গল্প। তেমনই এক সংগ্রামী কিশোরী সিমা আক্তার, যার ঈদ কখনোই রঙিন হয়নি। তার কাছে ঈদ মানেই প্রতিদিনের মতো আরেকটি অনিশ্চিত ভবিষ্যতের পথে পা বাড়ানো।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলার কিসমত ছৈলাবুনিয়া গ্রামের মৃত হাবিব চৌকিদারের মেয়ে সিমা। ছোটবেলায় বাবাকে হারানোর পর থেকেই কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হন তিনি। এক ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার বড় সিমা। তবে তার শৈশবে কখনোই ঈদের আনন্দ ছুঁয়ে যায়নি। অভাব-অনটন আর দারিদ্র্যের মাঝে কেটেছে তার প্রতিটি ঈদ।
সিমার ছোট ভাই বুদ্ধি প্রতিবন্ধী। ঈদ যে আনন্দের দিন, সে অনুভূতিও তার মধ্যে নেই। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি তার মা, যিনি অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। যা আয় হয়, তা দিয়ে কোনো রকমে চলে তাদের সংসার। খাবার জোটানোই যেখানে কঠিন, সেখানে ঈদের নতুন পোশাক বা ভালো খাবার পাওয়ার স্বপ্ন দেখাই যেন বিলাসিতা।
এলাকাবাসীরা জানান, সিমা ও তার পরিবারের দুঃখ-কষ্টের কথা অনেকেই জানেন, কিন্তু তাদের পাশে দাঁড়ানোর মতো উদ্যোগ খুব কমই দেখা যায়।
সীমার মা হেলেনা আক্তার চান, তার মেয়েটির যেন অন্তত চিকিৎসা হয় এবং একদিন সে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে। তারা আশাবাদী, সমাজের দানশীল মানুষদের সহানুভূতি ও সাহায্য পেলে সীমাদের ঈদও হয়ে উঠতে পারে আনন্দময়। একটু সহানুভূতিই বদলে দিতে পারে একটি শিশুর জীবন।