
গাইনোকোলজী এবং অবসটেট্রিক্সের কিংবদন্তী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী (টি এ চৌধুরী) স্যার আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রজিউন। রোববার তিনি ইন্তেকাল করেছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর তথ্য শেয়ার করেছেন গাইনোকোলজী এবং অবসটেট্রিক্স বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. সেহেরিন ফরহাদ সিদ্দিকা।
ডা. টি এ চৌধুরী ১৯৩৭ সালের ১০ অক্টোবর ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন। ঢাকা মেডিকেল কলেজ থেকে তিনি ১৯৬০ সালে এমবিবিএস পাশ করেন এবং গাইনোকোলজীতে অনার্স মার্কসহ প্রথম স্থান অধিকার করেন।
তিনি সরকারী বৃত্তি নিয়ে ইংল্যান্ডে যান এবং গাইনোকোলজী ও অবসটেট্রিক্সকে বিশেষ বিষয় হিসেবে নিয়ে 'রয়েল কলেজ অব সার্জনস অব এডিনবার্গ' থেকে এফআরসিএস করেন।
তিনি একবারের চেষ্টাতেই 'রয়েল কলেজ অব অবসটেট্রিশিয়ান এ্যান্ড গাইনোকোলজিস্ট' থেকে ১৯৬৫ সালে MRCOG পরীক্ষায় পাশ করেন।
ইংল্যান্ড থেকে ফিরেই তিনি স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান করেন। ছয় বছর পর তিনি চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজে বদলী হন এবং সেখানে সহযোগী অধ্যাপক ও পরবর্তীতে অধ্যাপক হন। 'ইন্সটিটিউট অব পোস্ট গ্রাজুয়েট মেডিসিন এ্যান্ড রিসার্চে' (IPGMR) পিজি হাসপাতালে অবসর গ্রহণের আগ পর্যন্ত অবস.এ্যান্ড গাইনোকোলজীর অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সাত বছর। এরপর ১৯৯৪ সালে অবসর নেন।
অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী 'অবস. এ্যান্ড গাইনোকোলজী সোসাইটি বাংলাদেশে'র প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন। পরে এই সোসাইটির প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তিনি 'বাংলাদেশ পেরিনেটাল সোসাইটি' এবং 'ফার্টিলিটি এ্যান্ড স্টেরিলিটি বাংলাদেশ' এর প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট।
তিনি 'এশিয়া এ্যান্ড ওশেনিয়া ফেডারেশন অব অবস. এ্যান্ড গাইনোকোলজী'র ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং 'সাউথ এশিয়া ফেডারেশন অব অবস. এ্যান্ড গাইনোকোলজী'র প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
টানা ২০ বছর তিনি বাংলাদেশ কলেজ অব ফিজিসিয়ানস এ্যান্ড সার্জনস এর কাউন্সিলর ছিলেন।
অধ্যাপক ডা. টি এ চৌধুরী অসংখ্য সায়েন্টিফিক পেপার প্রকাশ করেছেন এবং প্রচুর দেশী -বিদেশী জার্নালের সম্পাদনা পরিষদে তিনি দায়িত্ব পালন করছেন। প্রতিষ্ঠার শুরু থেকেই তিনি 'বাংলাদেশ জার্নাল অব অবস. এ্যান্ড গাইনোকোলজী'র সম্পাদনা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেন ।
দেশে এবং বিদেশের নানা সংগঠন তাকে সম্মাননা প্রদান করে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে অনুষ্ঠিত এমবিবিএস পরীক্ষায় প্রথম স্থান অর্জন করায় তিনি 'ATCO গোল্ড মেডেল' এবং নেপালে পোস্ট গ্রাজুয়েট জনশক্তি বৃদ্ধিতে অবদান রাখায় নেপালের রাজা কর্তৃক সর্বোচ্চ নাগরিক পুরষ্কারলাভ করেন।
২০২৩ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা স্বাধীনতা পদক লাভ করেন কিংবদন্তী চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. এ এইচ এম তৌহিদুল আনোয়ার চৌধুরী (টি এ চৌধুরী) স্যার।