তুরাগতীরের ইজতেমা মাঠে মুসল্লিরা অবস্থান করছেন নিজ নিজ খিত্তায় (নির্ধারিত জায়গা)। কেউ বসে বয়ান শুনছেন, কেউ রান্নাবান্না, কেউবা ব্যস্ত আনুষঙ্গিক কাজে। আছে মাঘের শীত। মাঝেমধ্যেই ঝাপটা দিচ্ছে ঠান্ডা বাতাস। তবুও মুসল্লিরা ব্যস্ত যে যাঁর কাজে।
টঙ্গীর তুরাগ নদের তীরের ইজতেমা মাঠের এ চিত্র আজ শনিবার সকাল ৯টার। তাবলিগের শুরায়ে নেজাম বা মাওলানা জোবায়ের অনুসারীদের প্রথম ধাপের ইজতেমার আজ দ্বিতীয় দিন চলছে। আগামীকাল রোববার আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এ ধাপের ইজতেমা।
ফজরের নামাজের পর পাকিস্তানের মাওলানা খোরশেদের আমবয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের আনুষ্ঠানিকতা। ইজতেমাকে ঘিরে তুরাগতীরে এখন হাজারো মানুষের সমাগম। সড়ক-মহাসড়ক ধরেও হাঁটছেন মুসল্লিরা।
সরেজমিন দেখা যায়, সকালের কুয়াশার পর হালকা রোদ উঠেছে। তবুও বইছে মাঘের ঠান্ডা বাতাস। এর মধ্যেই তুরাগতীরের প্রায় ১৬০ একর জায়গায় নির্মিত বিশাল শামিয়ানার নিচে খিত্তা অনুসারে অবস্থান করছেন অংশগ্রহণকারী মুসল্লিরা। মাঠে পাটি ও চট দিয়ে বিছানা পেতে বসে বয়ান শুনছেন তাঁরা। এর মাঝেই কেউ ব্যস্ত সকালের রান্নায়। কেউ কেউ করছিলেন অজু ও গোসলের কাজ।
ফজরের নামাজের পর শুরু হওয়া বয়ান শেষ হবে সকাল ১০টার দিকে। এরপর তালিম শেষে জোহর, আসর ও মাগরিবের নামাজের পর ধাপে ধাপে চলবে বয়ান। এর মাঝের সময়টাতে মুসল্লিরা ব্যস্ত থাকবেন তাবলিগ জামাতের নিজেদের মধ্যে ইসলামি আলোচনা, জিকির-আসগার ও অন্যান্য কাজকর্মে
কথা হয় খুলনার ডুমুরিয়া এলাকার তাবলিগের সাথি ইদ্রিস আলীর (৬১) সঙ্গে। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, এবার দুই ধাপে ইজতেমা হওয়ায় মাঠে মুসল্লিদের ভিড় কম। তাই তাঁদের গোসল, রান্না, খাওয়া বা আনুষঙ্গিক কাজ সহজ হয়েছে। তবে সব জেলার মুসল্লি না থাকায় এবার পরিচিত অনেকের সঙ্গেই দেখা হয়নি।
বিগত বছরগুলোতে তাবলিগের দুই পক্ষ মাওলানা জোবায়ের ও সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা দুই পর্বে আলাদাভাবে ইজতেমা করতেন। তবে এবারই প্রথম মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা দুই ধাপে ইজতেমা করবেন। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া প্রথম ধাপের ইজতেমা শেষ হবে আগামীকাল রোববার। এ ধাপে অংশ নিয়েছেন ৪১ জেলা ও ঢাকার একাংশের মুসল্লি। এরপর ৩ থেকে ৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় ধাপের ইজতেমা। ২ ও ৫ ফেব্রুয়ারি যথাক্রমে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। আর ১৪ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি মাওলানা সাদের অনুসারীদের ইজতেমা পালনের কথা আছে।