মানিকগঞ্জে হাতকড়া পরিয়ে তিন কিশোরকে সারারাত থানা হাজতে রাখার অভিযোগ উঠেছে। মারামারির অভিযোগে বুধবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থানা পুলিশ।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সাটুরিয়া থানার ওসি শাহিনুল ইসলাম বলেন, ‘একটি মামলায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আসামিরা কিশোর হলে আদালত সিদ্ধান্ত নেবেন।’
তিন কিশোর হলেন উপজেলার হরগজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ভোকেশনাল এসএসসি পরীক্ষার্থী সিয়াম হোসেন, সৈয়দ কালুশাহ কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র মনির হোসেন ও মানিকগঞ্জ ন্যাশনাল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থী অনিক হোসেন।
গতকাল বিকেলে হাজির করলে মানিকগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. রোকনউজ্জামান জামিন দেন সিয়াম ও অনিককে। আর মনিরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
জানা যায়, উপজেলার হরগজ গ্রামের কালু মিয়ার সঙ্গে একই গ্রামের ফরিদ হোসেনের ঝগড়া হয়। ২৭ ডিসেম্বর কালু মিয়া সাটুরিয়া থানায় ফরিদসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন। পরদিন ফরিদ হোসেন সাটুরিয়া থানায় সিয়াম, মনির, অনিকসহ ১৩ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাতপরিচয় অন্তত ১৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। বুধবার রাতে এজাহারভুক্ত তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরিয়ে রাতভর থানা হাজতে রাখে পুলিশ।
তদন্ত কর্মকর্তা এসআই রায়হান বলেন, বাদী তাদের বয়স ১৮ থেকে ২০ বছর উল্লেখ করেছেন। বয়স যাচাই-বাছাই না করে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বৃহস্পতিবার জানতে পেরেছি তিনজনই শিক্ষার্থী।
হাজতখানায় বুধবার রাতে সিয়াম, মনির ও অনিক সাংবাদিকদের জানান, কোনো মারামারির সঙ্গে তারা জড়িত নন। মিথ্যা মামলায় পুলিশ গ্রেপ্তার করে হাতকড়া পরিয়ে তীব্র শীতের মধ্যে সারারাত হাজতখানায় রেখেছে। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত চান তারা।
সিয়ামের বাবা নজরুল ইসলাম ও অনিকের বাবা মনির হোসেন বলেন, ‘বিনা অপরাধে হাতকড়া দিয়ে হাজতে রেখে পুলিশ সন্তানদের ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। সামনে এসএসসি পরীক্ষা। অথচ মামলা মাথায় নিয়ে আদালতে ঘুরতে হবে।’
হরগজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বজলুর রহমান বলেন, ‘তিনজনই কিশোর। তাদের সঙ্গে এমন আচরণ করা পুলিশের ঠিক হয়নি।’
রেডিওটুডে নিউজ/আনাম