রোববার,

২২ ডিসেম্বর ২০২৪,

৮ পৌষ ১৪৩১

রোববার,

২২ ডিসেম্বর ২০২৪,

৮ পৌষ ১৪৩১

Radio Today News

পাওনা টাকার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাঁধা, এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

রেডিওটুডে রিপোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১২, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

আপডেট: ০৮:১৩, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪

Google News
পাওনা টাকার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধার লাশ দাফনে বাঁধা, এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি

পটুয়াখালীর দুমকীতে পাওনা প্রায় আড়াই কোটি টাকা পরিশোধের দাবিতে জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হাকিম খানের মরদেহ দাফনে বাঁধা দিয়েছেন পাওনাদার শিক্ষক-কর্মচারীরা। গতকাল শনিবার সকালে দুমকীর পীরতলা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাকিম খান শুক্রবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে মারা যান (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার সকাল ১০টায় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফনের উদ্দেশে নেওয়া হচ্ছিল। পথে পীরতলা বাজার এলাকায় জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীরা হাকিম খানের মরদেহ আটকে দেন। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.শাহীন মাহমুদ ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম মৃধার হস্তক্ষেপে হাকিম খানের দাফন সম্পন্ন করা হয়। এ নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। 

জানা গেছে, বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হাকিম খান ২০১৫ সালে জলিশা বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন এবং ওই বিদ্যালয়ে ৬৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেন। 

অভিযোগ রয়েছে, চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে ওই শিক্ষক ও কর্মচারীদের কাছ থেকে জমি ও নগদ অর্থসহ প্রায় আড়াই কোটি টাকা নেন। অথচ এখন পর্যন্ত টাকার কোনো কিছুরই সুরাহা হয়নি। ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারীদের কথা, ‘উনি তো মরে গিয়ে বেঁচে গেলেন, কিন্তু আমাদের দেওয়া টাকার কি হবে?’  

বিদ্যালয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক মোহাম্মদ আতিক বলেন, ‘চাকরি দেখে বলে আমার বাবার কাছ থেকে ২০ শতক জমি লিখে নেওয়া হয়েছিল। এমপিওভুক্ত করার আশ্বাস দিয়ে দ্রুত ভবন নির্মাণ করতে বলেন তিনি। আমরা ভবনও নির্মাণ করি। উনি আমাকে একটি স্বাক্ষরযুক্ত ফাঁকা চেক দেন কিন্তু হিসাব নম্বরে কোনো টাকা ছিল না। এক দিকে জমি দেই, অন্যদিকে ভবন নির্মাণ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। উনি তো মরে গেলেন, কিন্তু আমাদের দেওয়া টাকার কি হবে?’ 

বিদ্যালয়ের শিক্ষক রেজওয়ানা মালা বলেন, ‘৬৭ জন শিক্ষক ও কর্মচারীর কাছ থেকে প্রায় আড়াই কোটি টাকা অনুদান নিয়েছেন প্রতিষ্ঠাতা সাহেব।’

বিদ্যালয়ের খণ্ডকালীন প্রধান শিক্ষক মো. মশিউর রহমান বলেন, ‘বিদ্যালয়ের জন্য ১০ শতক জমি দিয়েছি। ৬৭ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগের বিধান আছে কিনা তা আমার জানা নেই। এ বিষয়টি সম্পূর্ণ প্রয়াত প্রতিষ্ঠাতা সভাপতিই (আ. হাকিম খান) সবই জানতেন। তবে কতজন শিক্ষক ও কর্মচারীর কাছ থেকে কত টাকা নিয়েছেন উনি (হাকিম খান) তা আমার জানা নেই।’

বীর মুক্তিযোদ্ধা আ. হাকিম খানের মেয়ে তানিয়া আক্তার বলেন, ‘এ বিষয় আমি কোনো মন্তব্য করব না। ইউএনও মহোদয় যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই হবে।’

দুমকী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. সাইফুল আলম মৃধা জানান, ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারী ও মরহুমের পরিবারবর্গের সঙ্গে আলোচনা করে এবং কাগজপত্র পর্যালোচনা করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহোদয় সিদ্ধান্ত নেবেন।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শাহীন মাহমুদ জানান, বিষয়টি সমাধানের জন্য তাঁর কার্যালয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক-কর্মচারী ও মরহুমের পরিবারবর্গকে নিয়ে আলোচনায় বসা হয়েছিল। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের পরিচালনা কমিটি যৌথভাবে কাগজপত্র পর্যালোচনা করে দেখবে। তারপর আগামী মঙ্গলবার পুনরায় বসে এই বিষয়টির সমাধানের চেষ্টা করা হবে।

রেডিওটুডে নিউজ/আনাম

সর্বশেষ

সর্বাধিক সবার কাছের